মামলার বাদী মোঃ মামুন (৪৫) একজন প্রতিবন্ধী। সিএনজি অটো রিক্সা চালাইয়া কোন রকমে সংসার চালায়। গত ২৯/০৬/২০২০ ইং তারিখ রাত অনুমান ০২.৩০ ঘটিকার সময় বাদী সিএনজি নিয়া হালিশহর থানা এলাকার বড়পোল মোড়ে ভাড়ার জন্য অপেক্ষা করিতেছিল। ঐসময় দুই ব্যক্তি বাদীর সিএনজি অটোরিক্সার সামনে আসিয়া ১৫০/- টাকা ভাড়ার বিনিময়ে ফিসারীঘাট যায়। ফিসারীঘাট যাওয়ার পর ঐ দুই ব্যক্তি বাদীকে ভাড়া বাড়াইয়া দিবে বলিয়া ইপিজেড থানা এলাকার স্টীলমিল খালপাড়ে নিয়া যাইতে বলে। বাদী সরল বিশ্বাসে তাদের নিয়া ফিসারীঘাট হইতে ইপিজেড থানা এলাকার স্টীলমিল খালপাড় যাওয়ার পথে ২৯/০৬/২০২০ ইং তারিখ রাত অনুমান ০৩.৪৫ ঘটিকার সময় ইপিজেড থানাধীন ইস্টার্ণ রিফাইনারী পুকুর পাড় সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছিলে ঐ দুই ব্যক্তি হঠাৎ বাদীকে গাড়ী থামানোর জন্য বলিলে বাদী সিএনজি অটোরিক্সাটি থামায়। সিএনজি অটোরিক্সা থামানোর পর সিএনজিতে থাকা দুই ব্যক্তি গাড়ী থেকে নামিয়া বাদীকে টানা হেঁচড়া করিয়া সিএনজি অটোরিক্সা থেকে নামাইয়া মারধর করে। একপর্যায়ে উক্ত ব্যক্তিদ্বয় দুইটি ধারালো ছোরা বাহির করিয়া বাদীকে ভয় ভীতি দেখাইয়া ঘাই মারার চেষ্টা করিলে বাদী সরিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে ১নং আসামী জুয়েল এর ছোরার আঘাতে বাদীর পেটের বাম পাশে এবং ২নং আসামী বেলাল এর ছোরার আঘাত বাদীর বাম কানের পিছনে লাগিয়া সামান্য জখমপ্রাপ্ত হয়। এরপর আসামীদ্বয় বাদীর সিএনজি অটোরিক্সাটি চালাইয়া দ্রুত পালিয়ে যায়। বাদী কোন উপায়ন্তর না পাইয়া ৯৯৯-এ ফোন করে। তাৎক্ষনিক উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর), সিএমপি, চট্টগ্রাম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর), সিএমপি, চট্টগ্রাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর), সিএমপি, চট্টগ্রাম জনাব মোঃ কামরুল হাসান মহোদয়দের অবগত করিয়া ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মীর মোঃ নূরুল হুদা এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ইপিজেড থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব মোহাম্মদ হোছাইন এর নেতৃত্বে অপারেশন অফিসার এসআই/ কামাল হোসেন ও এসআই/ টিটু নাথ সঙ্গীয় ফোর্স সহ ইপিজেড থানাধীন ইস্টার্ণ রিফাইনারী পুকুর পাড় সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে গিয়া বাদীর নিকট হতে ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়ে বাদীকে সহ নিয়ে ইপিজেড থানা এলাকার সম্ভাব্য সকল স্থানে বাদীর ছিনতাইকৃত সিএনজি অটোরিক্সাটি খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাদীর সিএনজি অটোরিক্সাটি ইপিজেড থানাধীন সল্টগোলা ক্রসিং এর দিকে যাইতে দেখা যায়। এরপর এসআই/ টিটু নাথ তাহার সঙ্গীয় ফোর্স সহ উক্ত সিএনজি অটোরিক্সাটিকে ধাওয়া করে সিএমপি’র বায়েজিদ থানা এলাকার অক্সিজেন মোড় চৌধুরী ভবনের সামনে পাকা রাস্তায় বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের সহায়তায় ২৯/০৬/২০২০ ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৫.১৫ ঘটিকার সময় ছিনতাইকৃত সিএনজি অটোরিক্সা, যার রেজিঃ নং-চট্টগ্রাম-থ-১৩-৪৮৭৮ আসামী ১) মোঃ জুয়েল (২৫), পিতা-মোঃ শাহজাহান, মাতা-ফাতেমা প্রকাশ শিল্পী, সাং-মানিকখালী, মাগুড়া, বিল্লালের মায়ের বাড়ী, ডাকঘর-চাতল, থানা-কটিয়াদি, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ২) মোঃ বেলাল (২৬), পিতা-মোঃ এরশাদ, মাতা-ঝর্ণা আক্তার পারভিন, সাং-মোহরকনা, বোরহান চেয়ারম্যানের বাড়ী, থানা-নিকলি, জেলা-কিশোরগঞ্জ, বর্তমানে-১নং সিডিএ, টাইটানিক বিল্ডিং, নিচ তলা, আগ্রাবাদ, থানা-ডবলমুরিং, জেলা-চট্টগ্রামদ্বয়ের নিকট প্রাপ্ত হয়ে আটক করেন এবং আসামী ১) মোঃ জুয়েল (২৫), ২) মোঃ বেলাল (২৬)’দ্বয়কে গ্রেফতার করেন। আসামীদ্বয়ের দেহ তল্লাশীকালে ১নং আসামী মোঃ জুয়েল (২৫) এর পরিহিত ডান পায়ের জুতার মোজার ভিতর ০১টি নীল রংয়ের প্লাষ্টিকের বাটযুক্ত ধারালো ছোরা এবং ২নং আসামী মোঃ বেলাল (২৬) এর পরিহিত ডান পায়ের জুতার মোজার ভিতর ০১টি কাঠ রংয়ের প্লাষ্টিকের বাটযুক্ত ধারালো ছোরা প্রাপ্ত হয়ে সিএনজি অটোরিক্সা গাড়ীসহ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে গত ২৯/০৬/২০২০ ইং তারিখ ০৫.৪৫ ঘটিকার সময় জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন। এই ঘটনায় বাদীর এজাহারের ভিত্তিতে আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে মামলা রুজু করা হয়। উভয় আসামী বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চট্টগ্রাম জনাব মহিউদ্দিন মুরাদ সাহেবের আদালতে স্বেচ্ছায় অদ্য ৩০/০৬/২০২০ ইং তারিখ দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।